কুমিল্লা-১ আসনে নৌকা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে, দুই উপ. চেয়ারম্যানকে নিয়ে শক্তিশালী ঈগলের থাবা!

0 2,781

 

||নিজস্ব প্রতিনিধি||

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে নির্বাচনী পরিবেশ, একপেশে থেকে হঠাৎ করেই নাটকীয়তা মোড় নিয়েছে।

দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের একযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসানের ঈগল প্রতীকে যোগ দেয়ায়, ঈগল প্রতীকের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন স্হানীয় নেতাকর্মী ও জনগণ।

এতে বিজয়ের পথে থাকা সবুরের নৌকার ব্যাপক ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন দলের নেতাকর্মীরা। এখন অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েছেন নৌকার প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা।

জানা গেছে, কুমিল্লা-১ দাউদকান্দি-তিতাস আসনে নৌকার মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ওই আসনের জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতাকর্মীদের উপেক্ষা শুরু করেন তিনি। নিশ্চিত বিজয় জেনে তার কর্মী-সমর্থকরা দলের অভ্যন্তরে গ্রুপিং রাজনীতি ও দ্বন্দ্ব শুরু করেন।

দলীয় সূত্র জানায়, ওই আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া এবং তার ছেলে দুইবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমনের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। অপরদিকে তিতাসের দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকারেরও অনুরূপ ভোট ব্যাংক রয়েছে।

নৌকার মনোনয়ন লাভের পর সবুর তাদের পাশ কাটিয়ে চলা শুরু করেন। এতে দুই উপজেলার বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতাকর্মী চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। কিন্তু তাতেও কোনো পাত্তা দেননি সবুর। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের সিংহভাগ নেতাকর্মীকে দূরে ঠেলে দিয়ে নিজের মতো করে চলতে থাকেন।

এরই মাঝে ২০ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসানের মনোনয়ন বৈধ হলে তিনি দলের সব নেতাকর্মীদের দ্বারে দ্বারে দৌড়ঝাঁপ শুরু করলেও ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বেঁকে বসেন। এতে দুই উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান এবং দলীয় নেতাকর্মী নাঈমের পক্ষে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যার ফলে ওই আসনের নির্বাচনে নাটকীয় পরিবর্তন শুরু হয়।

তিতাস উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার বলেন, আমরা নৌকার পক্ষে নির্বাচন করার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম; কিন্তু সবুর সাহেব নিশ্চিত পাশ মনে করে দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে অপমান অপদস্থ করে দূরে ঠেলে দেন। তাছাড়া তিতাসে খুনি শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কাছে টেনে নেওয়ায় ভোটাররা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিতাসের জনসাধারণ এখন ঈগল প্রতীককে বিজয়ী করতে মাঠে নেমেছেন।

তিনি বলেন, নৌকা আর ঈগল এক দলের দুই ভাই। দুজনই বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার আদর্শের রাজনীতি করেন। ঈগল বিজয়ী হলে এ আসনে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হবে।

দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন বলেন, ব্যারিস্টার নাঈম জেনেটিক সূত্রে আওয়ামী লীগ। তিনি জয়ী হলে দাউদকান্দি তিতাস শান্তির জনপদে পরিণত হবে। দলের হাইকমান্ডের ইতিবাচক নির্দেশনা থাকায় আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছি।

এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর বলেন, মনোনয়ন পেয়ে আমি সবাইকে ফোন করেছি। বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য সব নেতাকর্মীকে আহবান জানিয়েছি। দাউদকান্দি তিতাসের আপামর জনসাধারণ আমার পক্ষে রয়েছেন। ৭ জানুয়ারি ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণ আমাকে বেছে নেবেন।

 

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.